Wednesday, 2 November 2016

নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্ত সমন্বয় সমিতির ডাকে দেশভাগের বলি ছিন্নমূল বাঙালির সাত দশকের অভিশাপ মুক্তির সংগ্রামে দিল্লী চলো ২১-২২ নভেম্বর, ২০১৬, যন্তর মন্তরে ধর্ণা

নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্ত সমন্বয় সমিতির ডাকে দেশভাগের বলি ছিন্নমূল বাঙালির সাত দশকের অভিশাপ মুক্তির সংগ্রামে দিল্লী চলো ২১-২২ নভেম্বর, ২০১৬, যন্তর মন্তরে ধর্ণা 
সংগ্রামী সাথী, রাজ্যে রাজ্যে আমাদের তীব্র আন্দোলনের ফলে কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের যৌক্তিকতা মেনে নিয়ে ‘সিটিজেনসিপ (এ্যমেণ্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬’ সংসদে উথ্থাপন করেছেন। আইনের কয়েকটি দিক নিয়ে কিছু বিতর্ক হওয়ায়, সে বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখার জন্য জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আমরা গভীর উৎকন্ঠার সঙ্গে লক্ষ করছি, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তদের স্বার্থ ও জীবন-মরণের কথা ভুলে গিয়ে, নীতির প্রশ্ন তুলে বিলটির সর্বাত্মক বিরোধিতায় ব্যস্ত। রাজ্যে রাজ্যে জয়েন্ট কমিটির সদস্য, এমনকি খোদ সভাপতির সঙ্গে দেখা করে আমরা আমাদের বক্তব্য জোরালো ভাবে তুলে ধরেছি।আমরা জানিয়েছি, নতুন করে কাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কি হবে না, সেই বিতর্কের ধুয়ো তুলে –যারা দেশভাগের বলি, স্বাধীনতার নামে যাদের স্বাধীনতা কেড়ে মৌলবাদী রাষ্ট্রের ধর্মীয় জিম্মিতে পরিণত করা হয়েছে, প্রাণ ও ইজ্জত রক্ষার দায়ে যারা ভিটে-মাটি ছেড়ে ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের যেন কিছুতেই নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা না হয়।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, তেলা মাথায় তেল দিতে সবাই ব্যস্ত।যারা বিপন্ন নয়, যাদের কেউ বিতাড়ন করে নি কোনোদিন, নাগরিকত্ব দাও বলে যারা দাবিও তোলেনি, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক বলে অনেকে চীৎকার করে গলায় রক্ত তুলে ফেলেছেন। কিন্তু, সত্তর বছর ধরে যারা দেশ হারিয়ে পথে-ঘাটে ঠাঁই নিয়েছেন, পুনর্বাসন পান নি, পেলেও জমির পাট্টা পান নি, পান নি জাতিপত্র, মাতৃভাষার অধিকার, আসামে যাদের ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’, উত্তরাখণ্ডে এই সেদিনও যাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে ভর্তি হতে বাধা দেওয়া হয়েছে বেনাগরিক বলে,-- তাদের জন্যে এঁদের চোখের জল কোনোদিন ঝরতে দেখিনি আমরা। 
ভুলে গেলে চলবে না, আমরা যে দাবি তুলে ধরেছি, তার ভিত্তি হলো স্বাধীনতার সময়কালে দেওয়া জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিশ্রুতি।অখণ্ড ভারতের যে অংশকে ভিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে, সেখানে থাকতে অনিচ্ছুক এবং বিপন্ন সংখ্যালঘুদের ভারতের মাটির উপরে আছে জন্মগত অধিকার।কেউ সেই অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে পারে না। এই দাবি শুধু রাজ্যে রাজ্যে নয়, তুলতে হবে দিল্লীতে পার্লামেন্টের সামনে গিয়ে।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এখন চাপান-উতোর চলছে। এ সময় কয়েককোটি মানুষের দাবিকে বাস্তবায়িত করতে হলে বিপুল সংখ্যায় রাজধানীর বুকে প্লাবনের মতো আমাদের আছড়ে পড়তে হবে। আগামী ২১-২২ নভেম্বর, ২০১৬, দিল্লীর যন্তর মন্তরে ধর্ণা-অবস্থানের ডাক দেওয়া হয়েছে। সমস্ত রাজ্য থেকে সংগ্রামী বন্ধুরা আসবেন। তাদের প্রেরণা জোগাতে আসবেন স্বনামধন্য লোককবি অসীম সরকার, গোপাল মহারাজের মতো বিশিষ্টজনেরা। আসুন, সহস্র সহস্র মানুষ সেখানে জমায়েত হয়ে আমরা বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলি –দেশভাগের বলি ছিন্নমূল মানুষদের নাগরকিত্ব দিতে হবে।ঘটাতে হবে সব বঞ্চনার অবসান। সংগ্রামী অভিনন্দন সহ -- ইতি- 
ডা সুবোধ বিশ্বাস, এ্যাড অম্বিকা রায়
সভাপতি। সাধারন সম্পাদক
কেন্দ্রীয় কমিটি । নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্ত সমন্বয় সমিতি

No comments:

Post a Comment